২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের কততম স্বাধীনতা দিবস

২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের কততম স্বাধীনতা দিবস - ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ১৯৭২ সাল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের জাতীয় দিবস পালিত হচ্ছে। এ বছর ও তার ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন হবে। 



২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের কততম স্বাধীনতা দিবস



২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের কততম স্বাধীনতা দিবস

আজ ২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের ৫৫তম স্বাধীনতা দিবস এবং ৫৪ তম স্বাধীনতা বার্ষিকী। ১৯৭২ সাল থেকে প্রতি বছর ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। ২০২১ সালের ২৬ শে মার্চ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হয়। 



১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখ প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ২৬ শে মার্চ দিনটিকে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়; এবং ২৬ শে মার্চ দিনটিকে সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ২৬ শে মার্চ দিনটিকে বাংলাদেশের জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে উদযাপিত হয়। 



তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের উপর আতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। 



সে সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গোলাবর্ষণ , অনেক জায়গায় নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন এবং অনেক জায়গায় পরিকল্পিত গণহত্যা চালানো হয়। এতে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থা হলে বিভিন্ন জায়গায় স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা না করেই অনেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। 


১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা পাওয়ার পরই আপামর বাঙালি পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও ভারত সরকারের সহযোগিতায় দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান হতে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান থেকে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ ভোরে দেশটির স্বাধীনতা ঘোষণার স্মরণে উদযাপিত হয়। 



স্বাধীনতা দিবস কীভাবে উদযাপন করা হয়

২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপন করা হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পেস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে এ দিবসটির উদযাপন শুরু হয়। এ দিনটিতে সংসদ ভবন আলোকসজ্জা দ্বারা আলোকিত করা হয়। 


২৬ শে মার্চ দিনটিতে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনেগুলোতে।এছাড়াও শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দীপ সমূহ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। 

 

২৬ শে মার্চ দিনটিতে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে স্টেডিয়ামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমবেত কুচকাওয়াজ ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শিত হয়। তাছাড়াও রাজনৈতিক বক্তৃতা, কনসার্ট, মেলা এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 


এ দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা দিবসের সম্মানার্থে দেশাত্মবোধক গান ও বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে পত্রিকা গুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। দেশের জন্য বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। 

 

আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো দল-মত নির্বিশেষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পুষ্প স্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন শুরু করে। 



স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ২০২৫

আজ ২৬ শে মার্চ ২০২৫ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস এবং রাষ্ট্রপতি মোঃ শাহাবুদ্দিন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্তবক অর্পণ করবেন। 


আজ ২৬ শে মার্চ ২০২৫ জাতীয় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।


মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক দ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার জানানো হয়, ২৬ শে মার্চ ঢাকা সহ সারাদেশে প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হবে। 


মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, বীর মুক্তিযুদ্ধ , যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পুষ্প স্তবক অর্পণ করবেন। এরপর স্মৃতিসৌধটি জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। 


আজ ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশের সর্বত্র জেলা ও উপজেলা সমূহের স্মৃতিসৌধে প্রস্তাবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। 


বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজন করবে যেমন- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্র অংকন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন। 


এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাবাডি, ফুটবল, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলার আয়োজন হবে। মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযুদ্ধ শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। 


অন্তরবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে একটি স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করেছেন। এই ডাকটিকিট টি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারটার দিকে অবমুক্ত করা হয়। 



২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের কততম স্বাধীনতা দিবস



ডাকটিকিট টি অবমুক্তকালীন সময়ে প্রধান ও প্রতিষ্ঠার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ডক্টর মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম শাহাবুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। 



বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ শে মার্চ তারিখ। ২৬ শে মার্চ তারিখকে জাতীয় দিবসও বলা হয়। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ পাকিস্তান থেকে ভোরে দেশটির স্বাধীনতা ঘোষণার স্মরণে উদযাপিত হয়। 


১৯৭২ সাল থেকে ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন হয়ে আসছে। এর পূর্বে ১৪ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস ছিল যেদিন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান ছিল।  



২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস

২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস না হয়ে ১লা মার্চ, ৭ই মার্চ, ২৫ শে মার্চ কিংবা ১৬ই ডিসেম্বর যে কোন একদিন হতে পারতো। কিন্তু তা না হয়ে ২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপনকরার একটা আবেগপ্রবণ গুরুত্ব রয়েছে। 


আওয়ামীলীগ নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ ও ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে পরামর্শ করে ১৯৭১ সালে প্রবাসে বাংলাদেশের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় প্রবাসী সরকার। যার আইনি ভিত্তি স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে দেওয়া হয়, সেখানে ২৬ শে মার্চের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 



স্বাধীনতার কত বছর চলছে ২০২৫

আজ ২৬ শে মার্চ ২০২৫ স্বাধীনতার ৫৪ বছর চলছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতার 53 তম বার্ষিকী এবং ৫৪ তম দিবস চলছে। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে ১৯৭২ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে এই দিনটি স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। 


এ দিনটিকে সরকারি জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতার এই দিনটিকে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্যভাবে দিনটি উদযাপিত হয়। 


আজকে আর্টিকেল থেকে ২৬ শে মার্চ ২০২৫ বাংলাদেশের কততম স্বাধীনতা দিবস, স্বাধীনতার কত বছর চলছে ২০২৫, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কত তারিখে, ২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস, স্বাধীনতা দিবস কীভাবে উদযাপন করা হয় এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ২০২৫ সম্পর্কে তথ্য জানতে পেরেছেন।

Post a Comment

0 Comments