বাংলাদেশের প্রথম ঔষধ কোম্পানি স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস অনেকেরই জানা নেই। ঢাকায় অবস্থিত একটি বাংলাদেশী বহুজাতিক সংগঠন স্কয়ার গ্রুপের যে কোন পণ্য আমাদের কাছে খুব পরিচিত হলেও এ স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস আমাদের ততটা জানা নেই। ১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী স্কয়ার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তারই সুযোগ্য পুত্র স্যামুয়েল এস চৌধুরী চেয়ারম্যান এবং তপন চৌধুরী স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব রয়েছে।
আজকে আর্টিকেলটির মধ্য দিয়ে স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস, স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সমূহ, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড, স্কয়ার হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতালের পরিষেবা, স্কয়ার স্বাস্থ্য সেবা সেন্টারসমূহ বিষয়ের তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ।
স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস
স্কয়ার গ্রুপ বাংলাদেশের প্রথম প্রস্তুতকারী ওষুধ কোম্পানি।১৯৫৮ সালে পাবনায় স্যামসন এইচ চৌধুরী এবং তিন বন্ধু মিলে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠিত করেন। চার বন্ধু সমান বিনিয়োগ করে ফার্মাসিটিক্যালস প্রতিষ্ঠা করায় কোম্পানির নাম দেন স্কয়ার এবং লোগো প্রস্তুত করেন স্কয়ার আকৃতির।চার বন্ধু মিলে কোম্পানিটি গড়ে তুললেও নেতৃত্বে ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী।
স্যামসন এইচ চৌধুরী এ ব্যবসায় আসার আগে সরকারি চাকরি করতেন। বাবা ডাক্তার হওয়ার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই ওষুধ নিয়ে নাড়াচাড়া করতেন।স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯৫২ সালে ডাক বিভাগের চাকরি ছেড়ে বাবার হোসেন ফার্মেসিতে বসতে শুরু করেন।
স্যামসন এইচ চৌধুরী চার বছর পর বাবার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে পাবনা জেলার আতাইকুলা গ্রামে 'ইয়াকুব অ্যান্ড সন্স' নামে ছোট ওষুধ কোম্পানি করেন। তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিকে বড় করতে তিন বন্ধু মিলে ১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। স্কয়ার গ্রুপ ১৯৮৭ সাল থেকে দেশকে ছাড়িয়ে বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ও ঔষুধ রপ্তানি শুরু করে। স্কয়ার গ্রুপ বর্তমানে বিশ্বের ৪২ টি দেশে ঔষধ রপ্তানি করছে।
স্কয়ার গ্রুপ শুধু ওষুধে নয়, এর বাইরেও স্কয়ার গ্রুপকে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে পরিণত করার পরিকল্পনা হাতে নেয়। স্যামসন এইচ চৌধুরীর সন্তানদের হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে যায় স্কয়ার গ্রুপ।
বহুজাতিক এই যাত্রাপথে ১৯৮৮ সালে যাত্রা শুরু করে ‘স্কয়ার টয়লেট্রিজ’। বাংলাদেশে নব্বইয়ের দশকে তৈরি পোশাকশিল্প গড়ে উঠতে শুরু করে। স্কয়ার গ্রুপ তখনই স্পিনিং মিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড। বর্তমানে গাজীপুর, ময়মনসিংহের ভালুকা ও হবিগঞ্জে স্কয়ারের বস্ত্র ও পোশাক কারখানা রয়েছে। দুই যুগের ব্যবধানে স্কয়ার বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ বস্ত্রকলে পরিণত হয়েছে।
স্কয়ার গ্রুপ কয়েক বছর পর স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ‘অ্যাগ্রো কেমিক্যালস ভেটেরিনারি’ ইউনিট খোলা হয়। স্যামসন এইচ চৌধুরীর ব্যবসায়িক দক্ষতায় কয়েক বছরের মধ্যেই স্কয়ার স্পিনিং লিমিটেড, স্কয়ার নিট ফেব্রিকস লিমিটেড, স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, স্কয়ার কনজিউমার প্রডাক্ট লিমিটেড, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, স্কয়ার ইনফরমেটিক্স এবং স্কয়ার হসপিটাল একে একে যাত্রা শুরু করে ।
বর্তমানে স্কয়ার গ্রুপের এই শিল্প ব্যবসায় সম্প্রসারিত হয়েছে ভোগ্যপণ্য, বস্ত্র, মিডিয়া, তথ্যপ্রযুক্তি, হাসপাতাল, নিরাপত্তা সেবা, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, হেলিকপ্টার সার্ভিস ও কৃষিপণ্য খাত সহ স্কয়ার গ্রুপের ২০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
১৯৫৮ সালে ১২ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করা স্কয়ার গ্রুপের বর্তমানে ৬০,০০০ হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে (এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত)।শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ২টি কোম্পানি রয়েছে ,স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্কয়ার টেক্সটাইলস।
স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সমূহ
১. স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
২. স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড।
৩. স্কয়ার ফ্যাশনস।
৪. স্কয়ার স্পিনিংস লিমিটেড।
৫. স্কয়ার হেস্ককন।
৬. স্কয়ার হসপিটাল।
৭. স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড।
৮. স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড।
৯. স্কয়ার সিকিউরিটিজ ম্যানেজমেন্ট।
১০. ফার্মা প্যাকেজেস।
১১. মিডিয়াকম।
১২. স্কয়ার এয়ার।
১৩. স্কয়ার ইনফরমেটিকস।
১৪. এজিস সার্ভিসেস লিমিটেড।
১৫. স্কয়ার ফ্যাশন ইয়ার্ন।
১৬. মাছরাঙা কমিউনিকেশনস।
১৭. স্কয়ার অ্যাগ্রো ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রসেসিং।
১৮. সাবাজপুর টি কোম্পানি।
১৯. স্কয়ার ডেনিম।
২০. স্কয়ার অ্যাপারেলস।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল্স লিমিটেড।স্যামসন এইচ চৌধুরী বাবার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে পাবনা জেলার আতাইকুলা গ্রামে 'ইয়াকুব অ্যান্ড সন্স' নামে ছোট ওষুধ কোম্পানি করেন।
স্যামসন এইচ চৌধুরী তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিকে বড় করতে তিন বন্ধু কাজী হারুনূর রশীদ, পি কে সাহা ও রাধাবিন্দ রায়কে সঙ্গে নিয়ে ১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে স্কয়ার গ্রুপের নাম রাখা হয় স্কয়ার ফার্মা।
স্যামসন এইচ চৌধুরী এবং তিন বন্ধুর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার টাকা। চারজনের সমান বিনিয়োগ বলে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় স্কয়ার।তিন বন্ধুর মধ্যে রাধাবিনোদ রায় ১৯৭১ সালে নিজের মালিকানার অংশ ছেড়ে দেন। অন্য দুই বন্ধু হারুনূর রশিদ ও পি. কে. সাহার মালিকানার অংশ এখনো রয়ে গেছে।
স্কয়ার গ্রুপের শুরুতে স্কয়ার ফার্মা সিরাপজাতীয় ওষুধ তৈরি করত। সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে কোম্পানির পরিসরও বড় হতে থাকে এবং স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস গড়ে তোলে।
স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ১৯৭৪ সালে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। তৎকালীন দেশের ঔষধের বাজারে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর একচেটিয়া প্রভাব ছিল । স্কয়ার গ্রুপ জনসনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার নিজদেশে ওষুধ উৎপাদন শুরু করে। ফলে স্কয়ার গ্রুপের ঔষধের বাজারে ক্রমান্বয়ে শক্ত ভিত তৈরি হয়।
১৯৮২ সালে এরশাদ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্কয়ার গ্রুপের বিদেশি কোম্পানির সাথে দেশীয় কোম্পানিগুলোর চুক্তি ও সনদ বাতিল করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেশের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধ বা এসেনশিয়াল ড্রাগসের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। স্কয়ার গ্রুপ ততদিনে বিদেশি কোম্পানি জনসনের জন্য ওষুধ তৈরি করতে গিয়ে স্কয়ারের নিজস্ব ওষুধ তৈরীর সক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।
১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে স্কয়ার গ্রুপের সেই সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস গড়ে তুলে। এরপর আর স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস কে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৯১ সালে এটি জনসাধারণের কাছে চলে আসে এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর (ID of SPL: ১৩০০২) তালিকাভুক্ত হয়।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ১৯৮৭ সালে প্রথম বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি শুরু করে স্কয়ার গ্রুপ বা স্কয়ার ফার্মা।১৯৮৯ সালে স্কয়ার গ্রুপ সেনোরা চালু করে; যা ছিল বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রথম স্যানিটারি ন্যাপকিন।
স্কয়ার ফার্মা ১৯৯৫ সালে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে স্কয়ারের ওষুধ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে ১০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। সে সময় ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের বা ফেসভ্যালুর এ শেয়ারের জন্য অধিমূল্য বা প্রিমিয়াম নেওয়া হয় ৮০০ টাকা।
সেই ৯০ কোটি টাকার মধ্যে ৫০ কোটি দিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গড়ে তোলা হয় স্কয়ার ফার্মার বিশাল কারখানা। ১৯৯৭ সালে বাকি ৪০ কোটি টাকায় তৈরি হয় স্কয়ার টেক্সটাইল।
১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী ও তার তিন বন্ধুর ২০ হাজার করে মাত্র ৮০ হাজার টাকা বিনিয়োগ এবং মাত্র ১২ জন কর্মচারী নিয়ে যাত্রা শুরু করা সেই ছোট্ট কোম্পানিটি— ২০০৮ ও ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পে বাজারের তাদের সর্বোচ্চ শেয়ার ছিল।২০১৭-১৮ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কয়ার ফার্মার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের মুনাফার পর প্রতিষ্ঠানটির সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকায়। বর্তমানে বাজার মূল্য হিসাব করা হলে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্কয়ার গ্রুপের প্রস্তুতকারী ঔষধ বর্তমানে বিশ্বের ৪২টি দেশে ঔষধ রপ্তানি হচ্ছে।২০২০ সালে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে ওষুধ রপ্তানি করার অনুমতি স্কয়ার গ্রুপ। আমদানি কারক দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এশিয়ার ১৯টি দেশ, আফ্রিকার ১৩টি, ওশেনিয়া অঞ্চলের ৩টি, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার ৬টি এবং যুক্তরাজ্যের বাজারে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ রপ্তানি করা হয়। ১৯৯৭ সালে স্কয়ার গ্রুপ বাংলাদেশ থেকে ঔষধ রপ্তানি করার জন্য জাতীয় রপ্তানি ট্রফিতে ভূষিত হয়।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের লক্ষ্য বিদেশের মাটিতে স্কয়ার গ্রুপের শক্ত অবস্থান তৈরি করা। সে লক্ষ্যে পৌঁছতে এরই মধ্যে স্কয়ার গ্রুপ আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় কারখানা তৈরি করছে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী বলেন, কেনিয়ায় কারখানা করতে প্রাথমিকভাবে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ১০০ কোটি টাকার মূলধন বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানা নির্মাণে ঋণ নেওয়া হয়েছে আরও ৮০ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে কেনিয়ায় কারখানায় মোট বিনিয়োগ দাঁড়াবে ২ কোটি ডলার বা ১৭০ কোটি টাকা।
স্কয়ার হাসপাতাল
স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর হাত ধরে ২০০৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্কয়ার হাসপাতাল শুরু করে।স্কয়ার হাসপাতাল A SQUARE WE CARE এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর কার্যক্রম পরিচালনা করা শুরু করে।স্কয়ার হাসপাতাল বাংলাদেশের বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। সাধারণ এবং বিশেষায়িত সব ধরনের সুযোগ সুবিধা স্কয়ার হাসপাতালে প্রদান করা হয়।
সর্বোচ্চ পর্যায়ে সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের বিশেষায়িত স্কয়ার হাসপাতাল বিপুল পরিমানে সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তির উপর সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশে তিনটি প্রধান প্রাইভেট হাসপাতালের মধ্যে স্কয়ার হাসপাতাল অন্যতম।
বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্যামসন এইচ চৌধুরী মেজ ছেলে তপন চৌধুরী।বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন গ্রেফতারকৃত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি জেনারেটর থেকে শব্দ দূষণের অপরাধে স্কয়ার হাসপাতালকে জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। পুনরায় ২০১৫ সালে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে স্কয়ার হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়।
স্কয়ার হাসপাতালের পরিষেবা
স্কয়ার হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ হেলিকপ্টার সার্ভিসেস, আইসিইউ সেবা সহ অ্যাম্বুলেন্স, আমেরিকান হাউজ কিপিং সিস্টেম, সার্বক্ষণিক ডিউটি ডাক্তার সহ সব ধরনের বিলাসবহুল স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। এই সেবা কার্যক্রমকে আরো উন্নত করতে ইউএসএ (USA), ইউকে (UK) সহ মধ্যপ্রাচ্যের (Middle East) উন্নতমানের হাসপাতালকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
স্কয়ার হাসপাতালে অত্যাধুনিক স্বাস্থ্যসেবা, উন্নত প্রযুক্তি, সার্বক্ষনিক ইর্মাজেন্সী সার্ভিস চালু রয়েছে। স্কয়ার হাসপাতাল সেন্ট্রাল এসি, লিফট এবং এলিভেটরযুক্ত।
স্কয়ার স্বাস্থ্য সেবা সেন্টারসমূহ
- স্কয়ার হার্ট সেন্টার
- ইনটেনসিভ কেয়ার সেন্টার
- সেফটি সার্জারি সেন্টার
- রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং সেন্টার
- প্যাথলজি এন্ড ল্যা সেন্টার
- লিভার এন্ড গ্যাস্ট্রিক সেন্টার
- ওমেন সেন্টার
- পেডিয়াট্রিক ও নিউনেটলজি সেন্টার
- এক্সিকিউচেক সেন্টার
- ফ্যাসিলিটি সেন্টার
- অর্থপেডিক্স এন্ড ট্রমা সেন্টার
- স্কিন এন্ড লেজার সেন্টার
- অনকোলজি এন্ড রেডিওথেরাপি সেন্টার
পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতাল বর্তমানে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। তবে সেই মুনাফা উদ্যোক্তারা নেন না। পুনর্বিনিয়োগ করেন। এমনকি নিজেরাও এ হাসপাতালে নগদ অর্থ দিয়ে চিকিৎসা নেন।
স্কয়ার গ্রুপের ইতিহাস -এ আরো কিছু সংযোজন
স্কয়ার গ্রুপর ১৯৯৪ সালে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়।২০০১ সালে বোভিস লেন্ড লিজের তত্ত্বাবধানে স্কয়ার একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানা স্থাপন করে।২০০২ সালে স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয় ।
স্কয়ার গ্রুপ ২০০৮ সালে স্কয়ার কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেডের মাধ্যমে জাপানে খাদ্য পণ্য রপ্তানি শুরু করে।স্কয়ার টয়লেট্রিজ ২০১৫ সালে ডায়াপার তৈরি শুরু করে। স্কয়ার ডেনিম হবিগঞ্জ জেলা থেকে কার্যক্রম শুরু করে ২০১৬ সালে।
২০১৮ সালে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল কেনিয়ার নাইরোবিতে একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার নির্মাণ শুরু করে তার সহযোগী স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস কেনিয়া ইপিজেড লিমিটেডের মাধ্যমে । নির্মাণের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন কেনিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, তপন চৌধুরী , ব্যবস্থাপনা পরিচালক। স্কয়ার গ্রুপের, এবং আদান মোহাম্মদ, কেনিয়ার ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ।
স্কয়ার গ্রুপ ২০১৯ সালে স্কয়ার এয়ার লিমিটেড নামে একটি হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করে। যা বর্তমানে তিনটি হেলিকপ্টার পরিচালনা করে এবং সরকারের মন্ত্রী এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ঢাকার বাইরে প্রকল্প পরিদর্শন সার্ভিসেস দিয়ে থাকে।
স্কয়ার গ্রুপ জাতিসংঘের গ্লোবাল কমপ্যাক্টের স্বাক্ষরকারী । এইচএসবিসি স্কয়ার গ্রুপকে ১০ বিলিয়ন টাকা ঋণ দিয়েছে, যা ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রথম ছিল যা টেকসইতার সাথে যুক্ত ছিল।
0 Comments