এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে

এমপক্স  ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO: World Health Organization)। এমপক্স পূর্বে মাঙ্কিপক্স বা বাঁদরবসন্ত  নামে পরিচিত ছিল। এমপক্স বাঁদরবসন্ত ভাইরাস (MPXV) দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ।এমপক্স  ভাইরাস (MPXV) মানুষ এবং কিছু প্রাণীর মধ্যে এর সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এমপক্স  ভাইরাস (MPXV) গুটি বসন্তের একই গোত্রেয় ভাইরাস হলেও এটি সাধারণত অনেক কম ক্ষতিকারক। 

আজকে আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে সে বিষয়ে। 



এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে



এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এমপক্স  ভাইরাস (MPXV) এর টিকার প্রথম অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO: World Health Organization)। বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন দেয়। 



এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে


২০২৪ সালে আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে এমপক্স ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। দেশটিতে এমপক্স ভাইরাস এর প্রথম টিকা MVA-BN পৌঁছানোর পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই টিকার অনুমোদন দেয়। অন্যদিকে ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম চালান কঙ্গোতে পাঠায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)। 


এমপক্স ভাইরাস মাঙ্কিপক্স আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় প্রথম শনাক্ত হয়। মাঙ্কিপক্স বা এমপক্সের টিকার প্রথম চালান হাতে পেয়ে আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এমপক্স ভাইরাস মাঙ্কিপক্স (MPXV) এর টিকা দেশটির এমপক্স ভাইরাস (MPXV) এর প্রাদুর্ভাব রোধে সহায়তা করবে। 


আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যামুয়েল রজার কাম্বা মুলাম্বা বলেন, সবার আগে সেসব প্রদেশে টিকা দেওয়া হবে, যেসব প্রদেশে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে।এমপক্স ভাইরাস এর এ টিকা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত। তবে এমপক্সের এ টিকা শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের দেওয়া যায়। 


এমপক্স ভাইরাস এর টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের অধীনে আঠারো বছর বা তার বেশি বয়সের লোকদের জন্য দুই ডোজের নিয়ম হিসেবে দেওয়া হবে।প্রাদুর্ভাবের পরিস্থিতিতে এ টিকা শিশু এবং কিশোর কিশোরীদেরও দেওয়া যেতে পারে। 


এমপক্স ভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে।আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় এমপক্স সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয়। চলতি বছর ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে এমপক্সের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। 



এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO: World Health Organization) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে এমপক্স শনাক্ত হয়েছে ২৭ হাজার মানুষের এবং মৃত্যু হয় ১ হাজার ১০০ জনের বেশি। আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তির মধ্যে বড় অংশই শিশু রয়েছে। 




এমপক্স ভাইরাসের লক্ষণ

এমপক্স পূর্বে মাঙ্কিপক্স বা বাঁদরবসন্ত  নামে পরিচিত ছিল। এমপক্স বাঁদরবসন্ত ভাইরাস (MPXV) দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ।এমপক্স ভাইরাসের লক্ষণ শুরু হয়— জ্বর, মাথা ব্যথা, পেশিতে ব্যথা, লিমফ নোড ফুলে যাওয়া এবং ক্লান্তিবোধ দিয়ে। পরবর্তীতে এটি ফুসকুড়ি হয়ে কঠিন আবরণ সৃষ্টি করে। 



এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে



এমপক্স ভাইরাসের লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে জল বসন্ত, হাম এবং গুটি বসন্তের মতো দেখা যেতে পারে। তবে গ্রন্থিগুলির ফুলে যাওয়ার উপস্থিতি দ্বারা এমপক্স ভাইরাস আলাদা করা যায়। ফুসকুড়ি গুলো শুরু হওয়ার আগে বৈশিষ্ট্যগতভাবে এগুলো কান এবং চোয়াল এর কাছে, ঘাড়ে বা কুঁচকিতে দেখা যায়।


জ্বরের কয়েক দিনের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগতভাবে ক্ষতগুলি হাতের তালু এবং পায়ের তলায় দেখা যায়; পরবর্তীতে মুখের উপরও এ ক্ষতগুলি দেখা যায়। এমপক্স ভাইরাসের এ সকল লক্ষণ বা উপসর্গের সংস্পর্শে আসার সময়কাল প্রায় ১০ দিন এবং উপসর্গের সময়কাল সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। 



মাঙ্কিপক্স ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়?

মাঙ্কিপক্স ভাইরাস বা এমপক্স ভাইরাস বা বাঁদরবসন্ত বন্যপ্রাণীর মাংস, পশুর কামড় বা আঁচড় থেকে, শরীরের তরল, দূষিত বস্তু থেকে এবং এমপক্সে সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এমপক্স ভাইরাস অন্যজনের শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে। 



এ সকল সংস্পর্শ গুলো হল-  শারীরিক সম্পর্ক, ত্বকের স্পর্শ, কাছাকাছি থেকে কথা বলা বা শ্বাসপ্রশ্বাস। এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ ফ্লুর মতো। রোগের একপর্যায়ে শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয় এবং এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।




সর্বপ্রথম কোন দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়ায়


মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম আফ্রিকার গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে মাঙ্কিপক্স ছড়ায়।১৯৭০ সালে সর্বপ্রথম মানুষের মধ্যে নথিভুক্ত কেসটি ছিল, কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ইকোয়াটুর প্রদেশে (জায়ারে) ৯ মাস বয়সী একটি শিশুর মধ্যে।কেসটিতে রিপোর্ট করা হয়েছিল যে, একটি পরিবারে গুটিবসন্তের টিকা ছাড়া এই একমাত্র সদস্য ছিল। তাকে গুটি বসন্তের টিকা দেওয়া হয়নি। 


এমপক্স ভাইরাস বা মাঙ্কিপক্স এর প্রায় ৫০ টি কেস রিপোর্ট করা হয়েছিল ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে। যার মধ্যে দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি ছিল জায়ারের। 




এমপক্স ভাইরাস এর টিকার প্রথম অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কবে দিয়েছে




বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এমপক্স  ভাইরাস (MPXV) এর টিকার প্রথম অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO: World Health Organization)।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, 'এমপক্সের বিরুদ্ধে টিকার অনুমোদন আফ্রিকার বর্তমান প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে এবং ভবিষ্যতে এই রোগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ'।



এমপক্স ভাইরাস জনিত প্রাণীজাত রোগ। এমপক্স ভাইরাস সর্বপ্রথম ১৯৫৮ সালে ডেনমার্কের বানরের দেহে সনাক্ত করা হয় বলে এ ভাইরাসকে মাঙ্কিপক্স বলা হয়।সর্বপ্রথম মানবদেহে ১৯৭০ সালে আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের ইকোয়াটুর প্রদেশে (জায়ারে) সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষিপ্তভাবে আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

Post a Comment

0 Comments