বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি

বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি এবং বাংলাদেশে বিকাশ পরিষেবার উৎপত্তি কিভাবে ? বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। দেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌছানোর জন্য দেশব্যাপী বিস্তৃত মোবাইল নেটওয়ার্ক একটি দ্রুত ও দক্ষ মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এই ধারণা থেকেই মূলত বাংলাদেশের বিকাশ পরিষেবার উৎপত্তি হয়েছে। আজকে আর্টিকেলে  বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 



বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি



বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি

বিকাশ ২০১১সালে আমেরিকার মানি ইন মোশন এলএলসি (America's Money in Motion LLC) এবং ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়।বিকাশ একটি ব্রাক ব্যাংক প্রতিষ্ঠান।বিকাশ বাংলাদেশে একটি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) যা ব্রাক ব্যাংক পিএলসি এর একটি সাবসিডিয়ারি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে কাজ করে। 


বিকাশ বাংলাদেশের একটি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রধান কারী হিসেবে, বিকাশ ব্যবহারকারীরা তাদের মোবাইল একাউন্টে অর্থ স্থানান্তর করতে পারে এবং বিভিন্ন পরিষেবা এক্সেস করতে পারে।


বিকাশ থেকে গ্রাহকরা USSD *২৪৭# ডায়াল করে এবং বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে নগদ অর্থ জমা করা, নগদ অর্থ উত্তোলন, টাকা পাঠানো, টাকা যোগ করা, রেমিট্যান্স, মোবাইল রিসার্চ, মূল্য প্রদান ও বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি সেবাগুলো নিতে পারেন। বিকাশ বাংলাদেশের প্রথম ইউনিকর্ন স্টার্টআপ (যার মূল্যায়ন এক বিলিয়ন ডলার বা তার বেশি) কোম্পানি


বিকাশ ব্র্যান্ড ব্যাংক লিমিটেডের অংশীদার হিসেবে কাজ করে এবং অন্যান্য ব্যাংক এবং অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করে। বিকাশ ২০১১সালে আমেরিকার মানি ইন মোশন এলএলসি (America's Money in Motion LLC) এবং ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছিল। 


২০১৩ সালের এপ্রিলে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) বিকাশ এর ন্যায্য অংশীদার হয়।  ২০১৪ সালের মার্চ মাসে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এর বিনিয়োগকারী হয়। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে চীনের আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গ সংস্থা আলিপের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এন্ড  ফিনান্সিয়াল বিকাশের ইকুইটি অংশীদার হয়। 



বিকাশ হেল্প নাম্বার

বিকাশ হেল্প লাইন নাম্বার - ১৬২৪৭




বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি





বিকাশ এর প্রতিষ্ঠাতা কে

বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন মার্কেটপ্লেস সেল বাজার এবং বাংলাদেশের প্রথম মোবাইলের আর্থিক সিস্টেম বিকাশের উদ্যোক্তা হলেন কামাল কাদির।বাংলাদেশের কামাল কাদির ই কমার্স নিয়ে কাজ করেন। কামাল কাদির বিদেশি বিনিয়োগ কারীদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে যান। 


তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান আইডিয়া টিকে দারুণ বলেন। তবে তিনি শর্ত হিসেবে 'মাঝখানে একটা ব্যাংক থাকতে হবে যাতে গ্রাহকের টাকা হাওয়া না হয়' বলেন। তিনি শর্তে রাজি হন। কামাল কাদির এ বিষয়টি ব্র্যাকের ফজলে হাসান আবেদকে জানান। এভাবেই কোন বিনিয়োগ ছাড়া এই ব্রাক ব্যাংক বিকাশের ১০% মালিক হয়। 



বিকাশ কত সালে চালু হয়

বিকাশ ২০১১সালে আমেরিকার মানি ইন মোশন এলএলসি (America's Money in Motion LLC) এবং ব্রাক ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে চালু হয়। বাংলাদেশের বিকাশ চালু করেন কামাল কাদির এবং ইকবাল কাদির দুই ভাই। 


২০০০-এর দশকের মাঝেমাঝি সময় দুই ভাই যখন বিকাশ বাংলাদেশে আনার সিদ্ধান্ত নেন তখন মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ও মোবাইল সার্ভিস ইন্টারনেট সার্ভিস ভেলুর এডেড সার্ভিস ফিলিপাইন, কেনিয়া এবং অন্যান্য উদীয়মান বাজারে চালু হয়। 


ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ এর সাথে স্থানীয় অংশীদারিত্বের প্রয়োজনে কামাল কাদির এবং ইকবাল কাদির ২০০৮ সালের যুক্ত হতে শুরু করেন। তাদের এই আলোচনা দু'বছর ধরে চলতে থাকে ২০১০ সালে উভয়ে মানি ইন মোশন এবং ব্রাক ব্যাংকের মধ্যে যৌথ উদ্যোগ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং ২০১১ সালের ২১ শে জুলাই বাংলাদেশে বিকাশ  চালু হয়। 




বিকাশ অ্যাপ

২০১৮ সালে বিকাশ অ্যাপ উদ্বোধন হয়। বিকাশ অ্যাপ সার্ভিস সেবার হল- সেন্ট মানি, মোবাইল রিচার্জ, পেমেন্ট, ক্যাশ আউট, অ্যাড মানি, পে বিল, সেভিংস, লোন, বিকাশ টু ব্যাংক, রিকোয়েস্ট মানি, রেমিটেন্স, মাইক্রো ফাইনান্স, এডুকেশন ফি, ডোনেশন, ইন্সুরেন্স চালু রয়েছে।




বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি



বিকাশের তথ্য ও  ইতিহাস

বিকাশ বাংলাদেশের মানুষকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দ্রুত, নিরাপদে ও সহজে টাকা পাঠানো এবং পেমেন্ট সেবা প্রদান করে। বিকাশের যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালে রবি নেটওয়ার্কের সাথে। ২০১২ সালে ২০ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিবন্ধিত হয় এবং ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে এটিএম ক্যাশ আউট চালু করে। 



বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি


২০১৩ সালে পঞ্চাশ হাজার এজেন্ট পয়েন্ট এবং এক কোটি গ্রাহক নিবন্ধিত হয়। ২০১৪ সালে এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড এবং ম্যানহাটান অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। ২০১৫ সালে ২হাজার গ্রাহক নিবন্ধিত হয় এবং আন্তর্জাতিক এমবিরিয়ন্থ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। 



বিকাশ কোন দেশের কোম্পানি



২০১৬ সালে বিশ্বের এক নাম্বার মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস রেমিটেন্স সেবা চালু করে। ২০১৭ সালে ফরচুন এর শীর্ষ ৫০ চেঞ্জ দা ওয়ার্ল্ড লিস্টে ২৩ তম স্থান এবং ৩ কোটির বেশি গ্রাহক নিবন্ধিত হয়। ২০১৮ সালে বিকাশ অ্যাপ উদ্বোধন এবং এমএফএস ক্যাটাগরিতে সেরা ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। 


২০১৯ সালে সবচেয়ে পছন্দের ব্রান্ড পুরস্কার অর্জন করে এবং বিকাশ নেক্সট অ্যাপ  উদ্বোধন করে। ২০২০ সালে বিকাশ সকল ক্যাটাগরিতে সেরা ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। ২০২১ সালে বিকাশ বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান এম্প্লয়ার অফ চয়েস লিস্ট এ আসে। 


২০২২ সালে চতুর্থ বার দেশরা ব্রান্ড এবং সর্বোচ্চ ভ্যাট পরিশোধকারী হিসেবে সুনাম অর্জন করে। ২০২৩ সালে বিকাশ সাত কোটি গ্রাহক এবং ফিনটেক পাইওনিয়ার সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশ ব্রান্ড ফোরাম পরিচালিত ভোক্তা জরিপে বিকাশ টানা পাঁচবার ২০১৯, ২০২০, ২০২১,২০২২ এবং ২০২৩ দেশ সেরা ব্র্যান্ডের পুরস্কার পায়। 

Post a Comment

0 Comments