বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নিয়োগের কথা জানিয়ে গত ৫ ই সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন , বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অণুবিভাগ। বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। 


২০১০ সালে ১৯৭১ সালের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারকার্য সম্পাদনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেন। জুলাই গণহত্যার বিচারকার্যও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা। 



বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর



বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ২০২৪

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম নিয়োগপ্রাপ্ত হন।এছাড়াও বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আরো চারজন কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।



বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্য চারজন প্রসিকিউটর হলেন, মোঃ মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বিএম সুলতান মাহমুদ এবং আব্দুল্লাহ আল নোমান। সরকার বদলের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কে নতুন করে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। 



বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নিয়োগের কথা জানিয়ে গত ৫ ই সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন , বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অণুবিভাগ।


৭ ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং আরো চারজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।



বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এর আগে দীর্ঘদিন আমার বাংলাদেশ পার্টির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন। 



বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোন বিচারপতি নেই।রোববার দুপুরে হাইকোর্ট এন এক্স ভবনের সামনে এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হতে পারে। 



এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টার সাথে আলোচনা হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্ভবত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হবে।  



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ করা হবে। তিনি আরো বলেন, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হত্যার ঘটনায় মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সাবেক সরকার প্রধান সহ অন্য যাদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। 




বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর





বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশব্যাপী যেসব অপরাধ হয়েছে, সেগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ, সেগুলোর বিচার শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই হবে। যদি ন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের আগে কোন থানায় বা কোন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়ে থাকলে সেগুলো প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসবো। 



সেই তদন্তটা মূলত করবে আমাদের তদন্ত সংস্থা। তদন্ত করে তার ট্রাইবুনালের কাছে মামলা আকারে উপস্থাপন করব। সেক্ষেত্রে মামলা কয়টা হবে, সে বিষয়টা পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে। 



উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের মানবতার বিরোধী অপরাধের বিচারকার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২৫ শে মার্চ তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় অভিযুক্ত অনেকের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যক্রম হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় অভিযুক্ত আরো কয়েকজনের বিচার কাজ চলমান ছিল। 



গত ৫ জুলাই থেকে ৫ ই আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী গণআন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার উপর তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণহত্যা চালায়। গণআন্দোলনে মুখে ৫ ই আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যায়। 




বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর





আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার গড়া  আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তারই  মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ।



বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ ই আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পৃথকভাবে মোট ১৯ টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা সহ ২২৭ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ জামা পড়েছে।



বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করে ক্ষমতারচ্যুত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য পুনর্গঠিত নতুন ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ হল ১৯৭৩ সালে পাশ হওয়া একটি আইন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এর অধীনে বাংলাদেশের গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ আন্তর্জাতিক আইনের অন্তর্ভুক্ত সকল সশস্ত্র বাহিনী, প্রতিরক্ষা ও এর সহায়ক কোন বাহিনীর সদস্যকে আটক ও ফৌজদারি আইনের অধীনে দণ্ডদান করতে পারে।


১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৩ সালের ১৯ নভেম্বর আইন হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ প্রণয়ন করা হয়।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন প্রণয়নের জন্য আন্তর্জাতিক ল কমিশনের প্রতিবেদন সমূহের সাহায্য গ্রহণ করা হয়। এ আইনটিতে ট্রাইবুনাল গঠনের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনি সাহায্যের বিধান রাখা হয়। 


এই আইনটিকে যাতে সুপ্রিমকোর্ট মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী হবার কারণ দেখিয়ে একে অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে না পারে সে জন্য সংবিধান প্রথম সংশোধন আইন ও পাস করা হয়। 


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা দল, সেনাবাহিনী কিংবা তাদের সহযোগী সশস্ত্র বাহিনীর বিচারের ক্ষমতা রাখে।যেমন মানবতা বিরোধী অপরাধ, শান্তি বিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ১৯৪৯ সালে জেনেভা কনভেনশন বিরোধী কাজ, এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যে কোন অপরাধ এর আওতাভুক্ত। 



আন্তর্জাতিক অপরাধ কি কি?

আন্তর্জাতিক অপরাধ হল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে পাশ হওয়া একটি আইন। আন্তর্জাতিক অপরাধ এর অধীনে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সহ আন্তর্জাতিক আইনের অন্তর্ভুক্ত সকল সশস্ত্র বাহিনী, প্রতিরক্ষা ও এর সহায়ক কোন বাহিনীর সদস্যকে আটক ও ফৌজদারি আইনের অধীনে দণ্ডদান করা যায়



মানবতাবিরোধী অপরাধ কী?

মানবতাবিরোধী অপরাধ হল এমন বিশেষ কিছু কর্মকাণ্ড যা উদ্দেশ্য মূলকভাবে ব্যাপক ও প্রণালীবদ্ধ নীতির অংশ হিসেবে যুদ্ধ কিংবা শান্তির সময়ে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়। বিরতি অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের মধ্যে পার্থক্য হল, এ অপরাধ কোন একক বিচ্ছিন্ন সৈনিকের করা কর্মকাণ্ড নয়, বরং কোন রাষ্ট্র বা সংস্থার নীতি বাস্তবায়নে ঘটানো হয়। প্রথমবারের মতো মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার হয় নুরেমবেরগের বিচারগুলিতে। 

Post a Comment

0 Comments