কর্ণফুলী টানেল নিয়ে প্রশ্ন

কর্ণফুলী টানেল দক্ষিণ এশিয়ার নদীর তলদেশ দিয়ে যানবাহন চলাচলকারী প্রথম টানেল। লুসাই পাহাড় থেকে নেমে আসা কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রাম শহরকে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে। এর এক ভাগে নগর ও বন্দর এবং অন্য ভাগে ভারী শিল্প এলাকা রয়েছে। ইতিমধ্যে কর্ণফুলী নদীর উপর তিনটি সেতু নির্মিত হলেও তা যানবাহন চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। নদীর মরফলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলি জমা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতার জন্য একটি বড় সমস্যা ও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। 


এই সমস্যার নিরসন করতে কর্ণফুলী নদীর উপর আর কোন সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে সুরঙ্গ পথ বা টানেল নির্মাণ করা প্রয়োজন মনে করে সরকার চট্টগ্রাম জেলার দুই অংশকে সংযুক্ত করার জন্য নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সরকার এটিকে বঙ্গবন্ধু টানেল নামে নামকরণ করেন। 



কর্ণফুলী টানেল নিয়ে প্রশ্ন



আজকে আর্টিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক চাকরির  পরীক্ষায় জন্য কর্ণফুলী টানেল নিয়ে প্রশ্ন সাজানো হয়েছে।


কর্ণফুলী টানেল নিয়ে প্রশ্ন


Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল কোথায় অবস্থিত?

= কর্ণফুলী টানেল বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে অবস্থিত। এটি চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ পতেঙ্গা ও আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে।


Q : কর্ণফুলী টানেল বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ শুরু হয় কবে?

= ২০১৬ সালের ১৪ই অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে সুইট টিপে আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।
 


Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হয় কবে?

=কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হয় ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর।এটি ২০২২ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২৩ সাল পর্যন্ত নির্মাণ কাজ অব্যাহত ছিল। 


 Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করেন কে?

= কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


Q : কর্ণফুলী টানেল এর মূল দৈর্ঘ্য কত?

= কর্ণফুলী টানেল এর মূল দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার।


Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল এর প্রস্থ কত?

= বঙ্গবন্ধু টানেলর প্রতি টিউবের প্রস্থ ১০.৮ মিটার বা ৩৫ ফুট এবং উচ্চতা ১৬ ফুট। দুটি টিউবের মধ্যবর্তী ব্যবধান ১১ মিটার।


Q : কর্ণফুলী টানেলর উচ্চতা কত ?

= কর্ণফুলী টানেল এর উচ্চতা ১৪. ৫ মিটার বা ৪৭ ফুট। 


Q : কর্ণফুলী টানেলর টিউব সংখ্যা কত?

= কর্ণফুলী টানেলর টিউব সংখ্যা দুইটি।দুটি টিউবের মধ্যবর্তী ব্যবধান ১১ মিটার।


Q : বঙ্গবন্ধু টানেলের বা কর্ণফুলী টানেল এর প্রতিটি টিউবের ব্যাস কত?

= কর্ণফুলী টানেলের প্রতিটি টিউবের ব্যাস ১২.৫ মিটার বা ৪১ ফুট। 

Q : কর্ণফুলী টানেল কোন ধরনের?

= কর্ণফুলী টানেলের ধরন- দুই লেনের ডুয়েল টানেল। 


Q : বঙ্গবন্ধু টানেলের ইংরেজি অপর নাম কি?

= কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেলের ইংরেজি অপর নাম হল— Two towns - one city. 


Q : দেশের প্রথম টানেলের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?

= দেশের প্রথম টানেল কর্ণফুলী টানেল এর মূল দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার।এর সঙ্গে সংযোগ সড়ক যুক্ত ৫.৩৫ কিলোমিটার।


Q : কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করে কোন কোম্পানি?

= কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করেন চীনা কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (CCCC)।


Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানের খননের পদ্ধতি কি?

= কর্ণফুলী টানেল ডাবল-শেল ড্রিলিং পদ্ধতিতে খনন করা হয়েছে।


Q : বাংলাদেশের প্রথম টানেলের নাম কি?

= বাংলাদেশের প্রথম টানেলের নাম কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল। 


Q : কর্ণফুলী নদী কোথায় অবস্থিত?

= বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার পতেঙ্গা কর্ণফুলী নদী অবস্থিত। এটি লুসাই পাহাড় থেকে নেমে এসেছে।


Q : কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ ব্যয় কত? 

= কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা (১০,৬৮৯ কোটি টাকা)।


Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের অর্থায়ন উৎস কি?

=  বঙ্গবন্ধু টানেল বা কর্ণফুলী টানেলের অর্থায়ন করে বাংলাদেশ সরকার (৪৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা) এবং চুক্তি অনুযায়ী চীনের এক্সিম ব্যাংক ২০ বছর মেয়াদী ঋণ হিসেবে ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা (৫৯১৩ কোটি টাকা)।


Q : এক্সিম ব্যাংক এর অর্থায়নে সুদের হার কত?

= চুক্তি অনুযায়ী চীনের এক্সিম ব্যাংক ২০ বছর মেয়াদী ঋণ হিসেবে ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা (৫৯১৩ কোটি টাকা)। 


Q : কর্ণফুলী টানেল কি প্রকার যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত?

= কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেলে পন্যবাহী ট্রাক, বাস, মোটর গাড়ি (মোটরসাইকেল ব্যতীত) চলাচলের জন্য উন্মুক্ত।


Q : কর্ণফুলী টানেল সেতু নয় কেন?

= কর্ণফুলী নদীর উপর তিনটি সেতু নির্মিত হলেও তা যানবাহন চলাচলের জন্য যথেষ্ট নয়। নদীর মরফলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলি জমা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতার জন্য একটি বড় সমস্যা ও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।এই সমস্যার নিরসন করতে কর্ণফুলী নদীর উপর আর কোন সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে সুরঙ্গ পথ বা টানেল নির্মাণ করা প্রয়োজন মনে করে সরকার। 


Q : কর্ণফুলী টানেলের খরচ কত?

= কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ ব্যয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা (১০,৬৮৯ কোটি টাকা)।


Q : কর্ণফুলী নদীর গভীরতা কত?

= কর্ণফুলী নদীর গভীরতা ৯-১১ ফুট। 


Q : কর্ণফুলী টানেলের গভীরতা কত?

= কর্ণফুলী টানলের  সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার।


Q : কর্ণফুলী টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেলের মালিক কে?

= কর্ণফুলী টানেলের মালিক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।


Q : কর্ণফুলী টানেল এর সুবিধা?

= কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব কমিয়ে দেবে। চট্টগ্রাম নগরীর যানজট অনেকাংশ কমিয়ে দেবে। এছাড়াও কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে নগরায়ন, শিল্পায়ন ও বন্দরের কার্যক্রম প্রসারিত হবে। আনোয়ারা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে।

Post a Comment

0 Comments