এমপিও শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতা ২০২৫ কবে ছাড় দেওয়া হবে এবং বৈশাখী ভাতা বেসিকের কত শতাংশ সে সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। বৈশাখী ভাতা ২০২৫ এর তথ্য নিয়ে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের সুবিধার্থে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি।
এমপিও শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতা ২০২৫ কবে ছাড় দেওয়া হবে
১০ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর) এর মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫১৪ শিক্ষক কর্মচারীর বৈশাখী ভাতার প্রস্তাব মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে।
এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অর্থাৎ বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন অনুযায়ী বৈশাখী ভাতা দেওয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর) এর মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান আরো জানিয়েছেন—
'এমপিও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা আগামী সপ্তাহে বেতন ভাতা পাবেন আশা করা যাচ্ছে। টেকনিক্যাল কিছু কারণে বিলম্ব হচ্ছে তবে আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমআইএস) সেলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে আগামী সপ্তাহে শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতা পান; সেজন্য তারা কাজ করছেন।
এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫১৪ শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৩ জন শিক্ষক কর্মচারী স্কুলের এবং ৮৬ হাজার ৬২১ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন কলেজের।
তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যার ইএফটি (EFT - Electronic Funds Transfer) এ ১০ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯১ জন শিক্ষক কর্মচারীর মার্চ মাসের বেতনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৮৬ হাজার ৭৭৯ জন কলেজের এবং স্কুলের দুই লাখ ৮৯ হাজার ৩১২ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন।
এর পূর্বে ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এমপিওভুক্ত স্কুল কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ও ফেব্রুয়ারীর বেতন ছাড় দেয়া হয়েছিল।২০২৫ সালের ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার বেতন উৎসবের ভাতা ছাড় হয়।শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ও ব্যাংক খোলার অনুরোধ জানান।
ফলে সংশ্লিষ্ট চারটি ব্যাংক শুক্রবার খোলা রাখা হয়। কিন্তু তাতেও অভিযোগ ছিল শিক্ষকরা বেতন তুলতে পারেননি বলে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫২৫ জন শিক্ষক কর্মচারীর উৎসব ভাতার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৮৪ হাজার ২৫ জন কলেজের এবং দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ জন স্কুলের শিক্ষক কর্মচারী ছিলেন।
বৈশাখী ভাতা বেসিকের কত শতাংশ
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের ও কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা বেসিকের বা মূল বেতনের ২০% হারে প্রদান করা হয় এবং ইনক্রিমেন্ট অর্থাৎ মূল বেতনের বার্ষিক বেতন ৫ % হারে বৃদ্ধি করা হয়।
তবে এরশাদ সরকারের পূর্ববর্তী সময়ে সরকারি কর্মচারীদের উৎসব ভাতা প্রতি মাসে বেতন হতে কর্তন করে সমন্বয় করা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে সরকারি কর্মচারীদের দুইটি বার্ষিক উৎসবের ভাতা মূল বেতনের ১০০% হারে প্রদান করা হয়।
বেসরকারি এমপিও ভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শতভাগ উৎসব ভাতা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় মানববন্ধন ও নানা কর্মসূচি পালন করলেও আজ পর্যন্ত শিক্ষকদের দাবি মানা হয়নি।
শিক্ষায় ইএফটি এর পূর্ণরূপ কি
শিক্ষায় ইএফটি একটি আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যার। শিক্ষায় ইএফটি এর পূর্ণরূপ হলো — EFT - Electronic Funds Transfer. সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ইএফটি বা ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফারের মাধ্যমে বেতন ভাতা দেওয়া হয়।
কিন্তু এমপিও ভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় দেওয়া হলেও তা রাস্তায় আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে এনালগ পদ্ধতিতে ছাড় দেওয়া হয়। ফলে এ সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন ভাতা তুলতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
শিক্ষকদের এ সকল ভোগান্তি নিরসনে ৫ই অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এমপিও ভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইএফটিতে দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
এমপিও ভুক্ত বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষকদের প্রাথমিকভাবে ২০৯ জন শিক্ষক কর্মচারীর অক্টোবর মাসের বেতন ইএফটি তে ছাড়া হয়। পরবর্তীতে ইএফটির মাধ্যমে জানুয়ারির ১ তারিখ ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতার সরকারি অংশের টাকা পায়।
এরপর, দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার শিক্ষক কর্মচারী, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার শিক্ষক এবং ৮২ এর বেশি শিক্ষক কর্মচারী ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন চতুর্থ ধাপে পেয়েছে। তবে তারা এখনো কেউই মার্চ মাসের বেতন পাননি। তবে আগামী সপ্তাহে তারা মার্চ মাসের বেতন ও বৈশাখী ভাতা পাবেন বলে জানিয়েছেন মাউশি এর মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান।
0 Comments