বিডা চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি কোথায়

সম্প্রতি প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা অর্জনকৃত বিডা চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি কোথায়, আশিক চৌধুরী স্কাই ড্রাইভার, আশিক চৌধুরী বিডা চেয়ারম্যান এবং আশিক চৌধুরীর বিশ্ব রেকর্ড কি এ সকল বিষয়ের উপর বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। 



বিডা চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি কোথায়



বিডা চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি কোথায়

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (Bangladesh Investment Development Authority ) —  বিডা (BIDA ) চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি বাংলাদেশের চাঁদপুর। আশিক চৌধুরীর জন্মস্থান চাঁদপুর হলেও তার বাবার চাকরির সুবাদে যশোরে তার শৈশব কাটে। আশিক চৌধুরী জন্মগত নাম চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।


আশিক চৌধুরী একজন অপেশাদার স্কাই ড্রাইভার শখের বসে তিনি স্কাই ড্রাইভ করেন এবং বিশ্ব রেকর্ড করে গিনিস বুকে নাম উঠান। তিনি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা (BIDA- Bangladesh Investment Development Authority) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেজা ( BEZA - Bangladesh Economic Zones Authority) এর চেয়ারম্যান।


সম্প্রতি আশিক চৌধুরী প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেয়েছেন। ৭ এপ্রিল ২০২৫ রোজ সোমবার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছেন।এ প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জাহেদা পারভীন স্বাক্ষর করেন। 


আশিক চৌধুরী উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন সময়ে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা সহ বেতন-ভাতাদি ও আনুষঙ্গিক প্রতিমন্ত্রীর সুযোগ-সুবিধা পাবেন। 



প্রারম্ভিক জীবন ও পড়াশুনা

আশিক চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলায়। তার জন্ম নাম চৌধুরী আশিক বিন হারুন। তার জন্মস্থান চাঁদপুর হলেও তার বাবার চাকরির সুবাদে তার শৈশব বেড়ে ওঠে যশোরে। তার বাবা ছিলেন একজন বিমানের পাইলট।


আশিক চৌধুরী ওরফে চৌধুরী আশিক বিন হারুন পড়াশোনা করেছেন- সিলেট ক্যাডেট কলেজ এবং ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে।পরবর্তীতে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন ২১তম ব্যাচ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে ২০০৭ সালে। 


আশিক চৌধুরী ফাইন্যান্সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন লন্ডন বিজনেস স্কুল থেকে এবং তিনি একজন চার্টার্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। 



পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবন 

আশিক চৌধুরী নাবিলা জাবিন খান এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্ত্রী নাবিলাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে; তার মধ্যে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে রয়েছে।



আশিক চৌধুরী স্কাই ড্রাইভার

আশিক চৌধুরী একজন সৌখিন বা আগ্রহী বা শখের স্কাই ড্রাইভার। তিনি বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মেমফিসে ৪১,৭৯৫ ফুট বা ১২.৭৩৯ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে ঝাপ দিয়েছিলেন। 


আশিক চৌধুরী গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃক গ্রেটেস্ট ডিসটেন্স ফ্রি ফল উইথ এ ব্যানার বা ফ্ল্যাগ রেকর্ড অর্জন করেছেন। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি তাকে স্পন্সর করেছিল। এছাড়াও আশিক চৌধুরীর বাংলাদেশের একটি প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স রয়েছে।



বিডা চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি কোথায়



আশিক চৌধুরী শৈশব থেকেই মহাশূন্যে পাখির মতো ওড়ার স্বপ্ন দেখে। তার মাথায় স্কাই ড্রাইভিং এর এই স্বপ্ন মূলত তার পাইলট বাবার কাছ থেকেই আসে। তিনি পেশাদার ব্যাংকার হওয়ার সুবাদে তাকে ঢাকা ও সিঙ্গাপুর যাতায়াতের মধ্যে থাকতে হতো। তিনি তাদের ফাঁকে সময় পেলেই আকাশ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার খেলায় অর্থাৎ ড্রাইভিং এ মেতে উঠতেন। 



কর্মজীবন

আশিক চৌধুরী তার কর্মজীবন শুরু করেন ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর টেরিটরি অফিসার হিসেবে। ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে যোগদান করেন। সেখানে তিনি  ঋণ কৌশল ও আর্থিক পরিকল্পনা বিভাগের ব্যবস্থাপক হিসেবে ২০১১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কাজ করেন। 


আশিক চৌধুরী স্পোর্টস বার দা বেঞ্চের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং তিনিই  ছিলেন বাংলাদেশী হিসেবে প্রথম। 


আশিক চৌধুরী লন্ডনে আমেরিকান এয়ারলাইন্সে আর্থিক ও কৌশলগত বিশ্লেষক হিসেবে ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে যোগদান করেন এবং ইউরোপ ও এশিয়ার ফাইন্যান্স প্রদান হিসেবে ২০১৯ সালের মে মাসে পদত্যাগ করেন। 


আশিক চৌধুরী বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রবেশনালস ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি গ্রামীন টেলিকম ট্রাস্ট এর একজন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

  

আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের এইচএসবিসি -তে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে সিঙ্গাপুর এইচএসবিসি -তে চলে যান। তিনি তিনি বাংলাদেশ বৃটিশ কাউন্সিল থেকে পেশাগত কৃতিত্বের পুরস্কার স্বরূপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। 


তিনি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং এর অ্যাসোসিয়েটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তিনি এ পদ থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে পদত্যাগ করেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস এর ফোন কল পেয়ে দেশের জন্য কাজ করার স্বার্থে এ পদত্যাগ করেন।


আশিক চৌধুরী ২০২৪ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা (BIDA- Bangladesh Investment Development Authority) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। তার পূর্বে এ পদের দায়িত্বে ছিলেন চৌধুরী লোকমান হোসেন মিয়া তিনি তার স্থলাভিষিক্ত হন। 


তিনি ২০২৪ সালের  ১৮ সেপ্টেম্বর মোঃ সরোয়ার বারীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেজা ( BEZA - Bangladesh Economic Zones Authority) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। সম্প্রতি তাকে ২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা প্রদান করা হয়। 



আশিক চৌধুরীর বিশ্ব রেকর্ড কি

আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে উড়ন্ত বিমান থেকে মেমফিসে ৪১,৭৯৫ ফুট বা ১২.৭৩৯ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে ঝাঁপ দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়ে বাংলাদেশের হয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেন।


আশিক চৌধুরী গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃক 'গ্রেটেস্ট ডিসটেন্স ফ্রি ফল উইথ এ ব্যানার বা ফ্ল্যাগ' শাখায় তিনি এ বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেছেন। তার আগে এ রেকর্ড করেছিলেন ভারতের স্কাইড ড্রাইভার জিতেন বিজয়ানা।



বিডা চেয়ারম্যান ও স্কাই ড্রাইভার আশিক চৌধুরীর বাড়ি কোথায়


চাঁদপুরের কৃতি সন্তান আশিক চৌধুরী ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি এ পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তার নিজস্ব কর্মদক্ষতা, যোগ্যতা ও উপস্থাপনা শৈলী দিয়ে মানুষের মন জয় করেছেন।


আশিক চৌধুরী গত ৯ এপ্রিল বুধবার বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি তথ্যবহুল ও সাবলীল ভাষায় প্রেজেন্টেশন দিয়ে দেশের সম্ভাবনাময়ী খাতগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার কল পাওয়া মাত্র তার আয়েশী বিলাসবহুল জীবনযাপন ছেড়ে দিয়ে দেশের জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে দেশে আসেন। ৭ এপ্রিল তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা প্রদান করা হয়। 

Post a Comment

0 Comments