স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে

স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে জানার আগে দেখে নেই স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কে। বাংলাদেশের প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এ স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী।শীর্ষস্থানীয় এ শিল্পোদ্যোক্তা চার বন্ধু মিলে মাত্র ২০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে ১৯৫৮ সালে পাবনার আতাইকুলায় যাত্রা শুরু করলেও তিনি ছিলেন স্কয়ার গ্রুপে চেয়ারম্যান।


আজকে আর্টিকেলে স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কে এবং স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে এ বিষয়ে তথ্য প্রদান করা হবে। 



স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে


স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে

স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী ওরফে স্বপন চৌধুরী।স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী।২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর মৃত্যুর পর স্কয়ার গ্রুপকে তার সন্তানরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।



১৯৫৮ সালে পাবনার আতাইকুলায় চার বন্ধুর মাত্র ২০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে স্কয়ারের যাত্রা শুরু হয়েছিল। চার বন্ধু মিলে স্কয়ারের যাত্রা শুরু করলেও স্যামসন এইচ চৌধুরী শীর্ষস্থানীয় এ শিল্পোদ্যোক্তা স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন।



২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মৃত্যুর পর এ স্কয়ার গ্রুপকে তার সন্তানরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তার তিন ছেলে এবং এক মেয়ে স্কয়ার গ্রুপের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছেন। এছাড়াও স্যামসন এইচ চৌধুরীর নাতি-নাতনিরা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন। স্কয়ার গ্রুপকে বহুজাতিক কোম্পানি করার উদ্যোগটি মূলত তারাই নিয়েছেন। 




স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে




স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন স্যামসন এইচ চৌধুরীর বড় ছেলে স্যামুয়েল এস চৌধুরী ওরফে স্বপন চৌধুরী।স্যামসন এইচ চৌধুরীর মেজো ছেলে তপন চৌধুরী হলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল ও স্কয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।



স্যামসন এইচ চৌধুরীর ছোট ছেলে অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু হলেন মাছরাঙা টেলিভিশন, স্কয়ার টয়লেট্রিজ ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক । স্যামসন এইচ চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে রত্না পাত্র স্কয়ার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান।



স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিনী অনিতা চৌধুরী কে বলা হয় "স্কয়ার মাতা"। স্কয়ার গ্রুপের নেপথ্যের প্রেরণাদাতা হিসেবে রয়েছেন স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিনী অনিতা চৌধুরী। তাদের মা অনিতা চৌধুরী ব্যবসায়িক বা পারিবারিক যে কোন বিষয়ে ভাই-বোনের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে বা যে কোন জটিল পরিস্থিতির সমাধানে নেপথ্যে  কাজ করতেন। এছাড়াও অনিতা চৌধুরী সন্তানদের বিশেষ বিশেষ সিদ্ধান্ত দিতেন।


স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী, , স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী এবং স্কয়ার ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্রের মা "স্কয়ার মাতা" অনিতা চৌধুরী, ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর রোববার দুপুরে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বার্ধক্য জনিত কারণে ৯০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। 


২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর মায়ের মৃত্যুর পরেও তাদের সন্তানেরা প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছে। স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী মৃত্যুর পূর্বেই সন্তানদের মধ্যে তার সম্পদ বন্টন করে দিয়ে গেছেন। 



প্রয়াত বাবা স্যামসন এইচ চৌধুরীর মিশন ও ভিশন অব্যাহত রাখার জন্য তিন ছেলেই তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।ছেলেদের যার যে ব্যবসা  তিনিই তা দেখভাল করছেন। ফলে কারও সঙ্গে কারও বিবাদ হওয়ার সুযোগ নেই। স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান সহ প্রত্যেকে স্কয়ার গ্রুপকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। 



স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কে

স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী (২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯২৫ - ৫ জানুয়ারি, ২০১২ সাল)। ১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী এবং তিন বন্ধু মিলে ২০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে পাবনায় একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠা করেন। চার জনের সমান বিনিয়োগ থাকায় প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়েছিল স্কয়ার। এটিই বাংলাদেশের প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে। 




স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে




স্যামসন এইচ চৌধুরীর নেতৃত্বে চার বন্ধু ডা. কাজী হারুনার রশিদ, ডা. পিকে সাহা এবং রাধা বিনোদ রায় মিলে পাবনা শহরের শালগাড়িয়ায় ১৯৫৮ সালে স্কয়ারের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তখন নাম ছিল স্কয়ার ফার্মা।মাত্র ১২ জন শ্রমিক নিয়ে ২০ হাজার টাকা মূলধনের স্কয়ার ফার্মার পথচলা শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে স্কয়ার ফার্মা নাম বদল করে হয়  'স্কয়ার ফর্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড'। 



১৯৫২ সালে স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী পাবনা জেলার আতাইকুলা গ্রামে প্রতিষ্ঠিত একটি ফার্মেসির মালিক ছিলেন।স্যামসন এইচ চৌধুরীর বাবা ছিলেন আউটডোর ডিসপেনসারির মেডিক্যাল অফিসার। বাবার পেশার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই ঔষুধ নিয়ে তিনি নাড়াচাড়া করেছেন। 



ভারত থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে ফিরে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাবনার আতাইকুলা গ্রামে।১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে চিন্তাভাবনা করে তিনি 'ফার্মেসি'কেই ব্যবসায় হিসেবে বেছে নিয়ে গ্রামের বাজারে ছোট একটি দোকান দিলেন।


১৯৫৮ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ওষুধ কারখানা স্থাপনের জন্য একটা লাইসেন্স পেয়ে যান । চার বন্ধুর মিলে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকায় পাবনা একটি ঔষধ কারখানা স্থাপন করেন যার নাম রাখা হয় স্কয়ার ফার্মা। স্কয়ারের নামকরণও করা হয়েছিল চার বন্ধুর প্রতিষ্ঠান হিসেবে। তাই এর লোগোও বর্গাকৃতির করা হয়েছিল।


স্কয়ার গ্রুপ বর্তমানে শুধু ঔষুধেই আটকে না থেকে এই শিল্প গ্রুপের ব্যবসায় সম্প্রসারিত হয়েছে প্রসাধনসামগ্রী, টেক্সটাইল, পোশাক তৈরী, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা এমনকি মিডিয়াতেও।স্কয়ার গ্রুপ ২০০৯-১০ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সেরা করাদাতা নির্বাচিত হয়।


যদিও চার বন্ধুর স্কয়ার ফার্মার যাত্রাটা এতটা সহজ ছিল না। প্রথম তিন বছর কোনও লাভের মুখ দেখেনি কোম্পানিটি। সেই স্কয়ার এখন দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এমনকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে অনেক আগেই নিজেদের পণ্য দেশের বাইরে নিয়ে গেছেন। বিদেশের মাটিতেও স্কয়ার গ্রুপ শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন।


স্কয়ার গ্রুপকে সম্পূর্ণ আধুনিক রূপ দেন স্যামসন চৌধুরী। আশির দশকে দেশের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠিত দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস বা স্কয়ার গ্রুপ ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি শুরু করে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্কয়ারকে।


১৯৮৭ সালে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল তাদের তৈরি ওষুধ প্রথম বিদেশে রফতানি করে। নব্বই দশকের শুরুতে কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে বাজারে শেয়ার ছাড়ে।১৯৮৮ সালে যাত্রা শুরু করে ‘স্কয়ার টয়লেট্রিজ। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড। 


স্কয়ার গ্রুপ স্যামসন চৌধুরীর ব্যবসায়িক দক্ষতায় কয়েক বছরের মধ্যেই একে একে যাত্রা শুরু করে স্কয়ার স্পিনিং লিমিটেড, স্কয়ার নিট ফেব্রিকস লিমিটেড, স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, স্কয়ার কনজিউমার প্রডাক্ট লিমিটেড, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, স্কয়ার ইনফরমেটিক্স এবং স্কয়ার হসপিটাল। 


স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর সন্তানদের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে স্কয়ার গ্রুপ। বর্তমানে ভোগ্যপণ্য, বস্ত্র, মিডিয়া, তথ্যপ্রযুক্তি, হাসপাতাল, নিরাপত্তা সেবা, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, হেলিকপ্টার সার্ভিস ও কৃষিপণ্য খাতে তাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০টি। বর্তমানে কর্মী রয়েছে ৫৫ হাজারের বেশি।


স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি  ৮৬ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর পর থেকে মা অনিতা চৌধুরী ছিলেন তাঁদের পরিবারের কমান্ড ইন চিফ। তিনি ছিলেন স্কয়ার মাতা। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর ৯০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। 


স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী ওরফে স্বপন চৌধুরী, স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী এবং স্কয়ার ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র প্রত্যেকে যে যার অবস্থান থেকে স্কয়ার গ্রুপকে শীর্ষে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।



স্কয়ার কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

স্কয়ার গ্রুপ ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী ও তার তিন বন্ধু মিলে এ স্কয়ার ফার্মা নামে কোম্পানিটির যাত্রা শুরু হয়। যা পরবর্তীতে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল নামকরণ হয়। চার বন্ধু মিলে সমান মূলধন নিয়ে স্কয়ার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করায় এর নামকরণ হয় স্কয়ার এবং স্কয়ার গ্রুপের লোগোও তৈরি করা হয় স্কয়ার আকারে। 



স্যামসন এইচ চৌধুরী এর ধর্ম কি

স্যামসন এইচ চৌধুরী খ্রিস্টান ধর্মের।স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯২৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের একটি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তার বাবা ইয়াকুব হোসাইন চৌধুরী ও মা লতিকা চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী।



স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান কে


স্যামসন এইচ চৌধুরীর স্ত্রীর অনিতা চৌধুরী এবং তার তিন ছেলে — স্যামুয়েল চৌধুরী স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান, স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী এবং স্কয়ার ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র।

Post a Comment

0 Comments